বর্তমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ ঈদের ছুটিতেও থাকবে কি না, তা করোনার প্রাদুর্ভাব ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। সম্প্রতি ১৪ দিনের বিধিনিষেধের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে । কিন্তু চলাচলের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু বিধিনিষেধ থাকবে । এবং কোরবানির হাট চলতে দেওয়া হলেও লোকজনের আসা–যাওয়া চলাচলের বিষয়টি হবে খুবই নিয়ন্ত্রিত।
করোনারভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি কঠোর বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আজ সোমবারে আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আবারো নতুন ঘোষণা অনুযায়ী জুলাই এর ১৪ তারিখ দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে এই বিধিনিষেধ আইন।
এর কারণ হলো, গতবছর ঈদের সময় সারা দেশের মানুষ বাড়িতে যাওয়ার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছিল। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে আপনারা যেখানে আছেন, সেখানে থেকেই যেন ঈদ পালন করেন।
ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
এখন মানুষের মনে প্রশ্ন: জগতে পারে, আসন্ন কুরবানীর ঈদের ছুটিতেও এ বিধিনিষেধ থাকবে কি না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এই কুরবানীর ঈদের আগেও চলমান বিধিনিষেধ থাকবে কি না, সেটা বিষয়টি পরিস্থিতিই বলে দেবে। সম্প্রতি ১৪ দিনের লকডাউন বিধিনিষেধ পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই থাকবে বলে জানান। কারণ, গত বছর ঈদের সময় বাড়িতে যাওয়ার কারণেই সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে যেখানে আছেন সেখানে থেকেই সবাই যেন ঈদ উৎসব পালন করেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এবার অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল কোরবানির গরুর হাটের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। দেশের মানুষ যাতে অনলাইন থেকে কোনোরকম জামেলা ছাড়াই কেনাকাটা করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। ওজন থাকবে দাম এর সমন্বয়ের মাঝে। তবে যদি সশরীরে হাট এ গিয়ে কিনতে হয়, তাহলে সেগুলো খুবই নিয়ন্ত্রিত হবে। কুরবানীর বাজারে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকবে এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। আবার নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের বেশি কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না করলে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। সবাইকে সংযতভাবে নিয়ম মেনে ও সুপরিকল্পিতভাবে কোরবানির হাট বসাতে ও করতে হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর এপ্রিল মাসের ৫তারিখ থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। সারা দেশে বিধিনিষেধের পাশাপাশি এবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখবেনএবং বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করবে। কিন্তু তারপরও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সারা দেশব্যপী কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। প্রথমেবার সাত দিনের বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা আরও এক ৭দিন বাড়ানোর পরামর্শ দেন করোনা-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেই পরামর্শ অনুযায়ী আজ সোমবার তা বাড়ানো হয়েছে।
সম্প্রতি বিধিনিষেধে সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস, শপিং মল, দোকানপাট এবং গণপরিবহন ছাড়াও যন্ত্রচালিত যানবাহন (জরুরি কাজে নিয়োজিত ছাড়া) চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন রকম কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবার বেসামরিক প্রশাসনকেও সহায়তার জন্য টহলে নামিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিল্পকারখানাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবা, করোনাভাইরাসের টিকাদান, রাজস্ব আদায় কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট, গণমাধ্যম পরিষেবা (দোকানপাট ইলেকট্রনিক মিডিয়া), সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থবিধি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকযুগে সেবা, ব্যাংক ও ফার্মেসি, ফার্মাসিউটিক্যালসহ আরো অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও যেকোনোসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবে বলে জানা গেছে এবং বিধিনিষেধের সময় সীমিত পরিসরে রেখে ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে।